মুন্সিগঞ্জ এভিজেএমে শিক্ষক হেনস্তা, নেপথ্যে শিক্ষকরাই

লিড নিউজ

মুন্সিগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী এভিজেএম গভ. গার্লস হাই স্কুলে মব জাস্টিসের মাধ্যমে শিক্ষককে হেনস্তা করা হয়েছে৷ তদন্ত চলাকালেই কৌশলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে বদলির আবেদনও নেওয়া হয়েছে৷ জানা যায় এই ঘটনার পিছনে রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই। এই ঘটনার মূলে রয়েছে কোচিং বাণিজ্যে। কোচিং বাণিজ্যে পথের কাটা দূর করতেই ঘটানো হয়েছে এমন ঘটনা৷

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফ হোসেন, গফুর সরকার, রাসেল আহমেদ, আ.ন.ম মাহফুজ সহ প্রায় অর্ধেকের বেশি শিক্ষক জড়িত রয়েছে। গত ৮ই আগষ্ট থেকে শিক্ষকরা একজন অভিভাবক সহ প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও আরিফ হোসেন বন্ধুদের বিভিন্ন ফেক আইডির মাধ্যমে বৈষম্য বিরোধী ফেসবুক গ্রুপে অপপ্রচার চালানো শুরু করে৷ এরই একপর্যায়ে ২৯জন শিক্ষক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন৷ এই অভিযোগের কপির সাথে কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ যুক্ত করে জেলা প্রশাসন,মুন্সীগঞ্জ বরাবরও দাখিল করেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র শিক্ষক – হেনস্তার ভয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়েছে ৷
মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করলে জেলা প্রশাসন তদন্ত করার নির্দেশ দেন৷
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নুরে আলম বলেন- আমি বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি প্রায় চার মাস হলো। এর মধ্যে কেউ কোন দিন মনোরঞ্জনের বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেনি৷ সে অত্যন্ত ভাল শিক্ষক৷ হঠাৎ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন৷ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রুপিং রয়েছে৷ এই গ্রুপিংয়ের থেকেই এটা হয়েছে৷

প্রধানশিক্ষককে মনোরঞ্জন ধরের বিপক্ষে নিতে নেওয়া হয় নানান কৌশল৷ ফেসবুকে তাকে দূর্নীতিবাজ সহ নানান ভাবে সমালোচনা করে তাকে চাপে রাখা হয় এবং কি তাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়।

এরই সাথে যুক্ত হয় কোচিংবাজ শিক্ষক মাকহাটী গুরুচরণ স্কুলের শিক্ষক ইব্রাহিম শেখ রণি। শহরের বিজ্ঞান বিভাগের কোচিং আধিপত্য বজায় রাখতে এভিজেএম এর শিক্ষকদের সাথে হাত মেলান। এর ফলশ্রুতিতে তদন্তের দিন বিদ্যালয়ের বাইরে বহিরাগত ছাত্র উপস্থিত করেন রনি। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে দিয়ে তৈরী করে ভয়াবহ পরিস্থিতি। এরই একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে চাপের মুখে বদলি আবেদন লিখতে বাধ্য হন মনোরঞ্জন ধর৷

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোরঞ্জন ধর জানান – বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফ হোসেন, গফুর সরকার, রাসেল আহমেদ এবং জসিমউদদীন এর নেতৃত্বে এটা করা হয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে মাকহাটী স্কুলের ইব্রাহীম শেখ রণি । তদন্ত চলমনান রয়েছে৷ আমি ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের দাবি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ইন্ধনদাতাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে রাজনীতি সহ্য করা হবে না৷ সেই কোচিং বানিজ্য বন্ধে জেলা প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *