
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্ড ও ভর্তুকি মূল্যের পণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। এ অভিযোগে যাচাই-বাছাই শেষে ৪৩ লাখ কার্ডধারীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। টিসিবির এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ফলে বিগত সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্বৈরাচার সমর্থক জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। জুলাই বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক তদন্তে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এক কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে টিসিবির পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম ডিজিটাইজড করার সময় দেখেছি ৩৭ লাখ ভুয়া কার্ডধারী। টিসিবি সারা দেশে যে কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি পরিবারে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যপণ্য বিতরণ করে, সেটি তাত্ত্বিকভাবে সুন্দর একটি প্রকল্প।
তবে বিগত সরকারের সময়ে এই কার্ড বিতরণ এবং ডিলার নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। বর্তমান সরকার এসব অনিয়মকে চিহ্নিত করতে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে যেভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে টিসিবি।
ফ্যামিলি কার্ড ও ভর্তুকি মূল্যের পণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয় ঢাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যুগ্ম পরিচালক (অফিস প্রধান) হুমায়ুন কবির বলেন, কার্ড বিতরণের দায়িত্ব আমাদের নয়। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় সরকার কার্ড বিতরণ করে। আমরা শুধু সরকারের দেওয়া কার্ডের তালিকা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ ও বিক্রি করি। ফলে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে যেসব নিম্ন আয়ের পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মহীন হয়ে পড়েছে, তাদের সহায়তার জন্য ‘নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান’কর্মসূচির আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ লাখ নিম্ন আয়ের পরিবারকে দুই হাজার ৫০০ টাকা করে ৮৮০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। এ প্রকল্পেও ডিজিটাল কায়দায় ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাট হয়।